৪৮-৭২ ঘন্টায় ক্যাশ অন ডেলিভারি। ০১​৫​৮১১০০০০১​

অসীম মানসলোকে একাকী এক কবি
অসীম মানসলোকে একাকী এক কবি
570.00 ৳
600.00 ৳ (5% OFF)
ওরা চারশো বছর বাঁচে
ওরা চারশো বছর বাঁচে
450.00 ৳
600.00 ৳ (25% OFF)

আমি খালেদ মোশাররফ

https://gronthik.com/web/image/product.template/845/image_1920?unique=d6611f8

206.25 ৳ 206.25 BDT 275.00 ৳

275.00 ৳

Not Available For Sale


This combination does not exist.

Out of Stock

প্রকাশন :

আমার পিতৃ প্রদত্ত নাম খালেদ মোশাররফ। ১৯৩৭ সালের নভেম্বর মাসে আমার জন্ম। জন্মস্থান জামালপুর মোশাররফগঞ্জ গ্রামে। পিতার নাম মোশাররফ হোসেন এবং মাতা জমিলা আখতার।

আমি রূপকথায় বিশ্বাসী নই। কিংবদন্তীর কথাবাতাও আমার বিশেষ জানা নেই। আমি বাংলাদেশের ইতিহাসের সামান্য একটু অংশ সগৰ্বে বলতে পারি। কেননা এই গৌরবজ্জল ইতিহাস যাঁরা রচনা করেছেন, আমি তাঁদেরই একজন। সব সময়ে মনে রাখবেন, বাঙালি জাতির সহস্ৰাধিক বছরের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিজয় হচ্ছে একমাত্র উল্লেখযোগ্য বিজয়। আর এটাই হচ্ছে আমাদের রক্তাক্ত প্রকৃত ইতিহাস।

১৯৭১ সালে মুজিবনগরের নির্বাসিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে সংগঠিত মহান মুক্তিযুদ্ধে আমি ছিলাম ২ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার এবং যুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বে ‘কে’ ফোর্সের প্রধান।

বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের জন্য আমার এই জবানবন্দি। এটা তো শুধু জবানবন্দি নয়; এটা হচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি পরিচ্ছদ মাত্র। অথচ এসব ব্যস্তব ইতিহাস আমাদের স্কুল-কলেজের পাঠ্য পুস্তকে হয় অনুপস্থিত- না হয় বিকৃতভাবে উপস্থাপিত।

একটা গণতান্ত্রিক রায়কে অগ্রাহ্য করে পাকিস্তানের তৎকালীন জংগী প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ দিবাগত রাতে আকস্মিকভাবে বাংলাদেশে গণহত্যায় লিপ্ত হয়। এর মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার আহ্বানে (২৬ শে মার্চ ভোর রাতে) আপামর বাঙালি জনসাধারণ সেদিন মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পাকিস্তান সৈন্য বাহিনীর চাকুরিতে থাকা সত্ত্বেও আমরা এর ব্যতিক্রম নই। সেদিন বাংলাদেশে অবস্থানরত বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করেছিল। অচিরেই মুজিবনগর সরকারের প্ৰধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ স্বয়ং উদ্যোগী হয়ে সংগঠন করলেন এক বিশাল মুক্তিবাহিনী। বাংলাদেশের রণাঙ্গণকে তিনি বিভক্ত করলেন ১১টি সেক্টরে (নৌ-কমান্ডের পৃথক সেক্টরসহ)। আমি দায়িত্ব লাভ করলাম পূর্ব রণাঙ্গণে গুরুত্বপূর্ণ ২ নম্বর সেক্টরের।

আমাদের প্রধান সেনাপতি হিসাবে নিযুক্ত হলেন অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল এম এ ডি ওসমানী এম সি। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জনাব ওসমানী আওয়ামী লীগ টিকিটে সিলেট থেকে নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্য। এ সবই হচ্ছে বাস্তব ইতিহাস।

আমার জবানবন্দি কিন্তু অসম্পূর্ণ। ১৯৭১ সালের ১৯ শে মার্চ থেকে ২৮ শে জুন পর্যন্ত মাত্র ১০০ দিনের সশস্ত্ৰ প্রতিরোধ সংগ্রামের জবানবন্দি। এরপরেই প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধ। আসলে কিন্তু রণক্ষেত্রের বিজয়ের ইতিহাস তো বলতেই পারলাম না। সে ইতিহাস হচ্ছে ১৯৭১ সালের জুলাই মাস থেকে শুরু করে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের একটার পর একটা বিজয়ের ইতিহাস। পুরো বক্তব্য লিপিবদ্ধ করার আর সময় পেলাম কই?

[‘আমিই খালেদ মোশাররফ’ বইটির শিরোনামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশার্রফ-এর জবানিতে এই প্রাসংগিক কথাবার্তা সম্পাদক]

Writer

এম আর আখতার মুকুল

Publisher

অনন্যা

Language

বাংলা

Country

Bangladesh

Format

হার্ডব্যাক

আমার পিতৃ প্রদত্ত নাম খালেদ মোশাররফ। ১৯৩৭ সালের নভেম্বর মাসে আমার জন্ম। জন্মস্থান জামালপুর মোশাররফগঞ্জ গ্রামে। পিতার নাম মোশাররফ হোসেন এবং মাতা জমিলা আখতার।

আমি রূপকথায় বিশ্বাসী নই। কিংবদন্তীর কথাবাতাও আমার বিশেষ জানা নেই। আমি বাংলাদেশের ইতিহাসের সামান্য একটু অংশ সগৰ্বে বলতে পারি। কেননা এই গৌরবজ্জল ইতিহাস যাঁরা রচনা করেছেন, আমি তাঁদেরই একজন। সব সময়ে মনে রাখবেন, বাঙালি জাতির সহস্ৰাধিক বছরের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিজয় হচ্ছে একমাত্র উল্লেখযোগ্য বিজয়। আর এটাই হচ্ছে আমাদের রক্তাক্ত প্রকৃত ইতিহাস।

১৯৭১ সালে মুজিবনগরের নির্বাসিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে সংগঠিত মহান মুক্তিযুদ্ধে আমি ছিলাম ২ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার এবং যুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বে ‘কে’ ফোর্সের প্রধান।

বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের জন্য আমার এই জবানবন্দি। এটা তো শুধু জবানবন্দি নয়; এটা হচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি পরিচ্ছদ মাত্র। অথচ এসব ব্যস্তব ইতিহাস আমাদের স্কুল-কলেজের পাঠ্য পুস্তকে হয় অনুপস্থিত- না হয় বিকৃতভাবে উপস্থাপিত।

একটা গণতান্ত্রিক রায়কে অগ্রাহ্য করে পাকিস্তানের তৎকালীন জংগী প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ দিবাগত রাতে আকস্মিকভাবে বাংলাদেশে গণহত্যায় লিপ্ত হয়। এর মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার আহ্বানে (২৬ শে মার্চ ভোর রাতে) আপামর বাঙালি জনসাধারণ সেদিন মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পাকিস্তান সৈন্য বাহিনীর চাকুরিতে থাকা সত্ত্বেও আমরা এর ব্যতিক্রম নই। সেদিন বাংলাদেশে অবস্থানরত বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করেছিল। অচিরেই মুজিবনগর সরকারের প্ৰধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ স্বয়ং উদ্যোগী হয়ে সংগঠন করলেন এক বিশাল মুক্তিবাহিনী। বাংলাদেশের রণাঙ্গণকে তিনি বিভক্ত করলেন ১১টি সেক্টরে (নৌ-কমান্ডের পৃথক সেক্টরসহ)। আমি দায়িত্ব লাভ করলাম পূর্ব রণাঙ্গণে গুরুত্বপূর্ণ ২ নম্বর সেক্টরের।

আমাদের প্রধান সেনাপতি হিসাবে নিযুক্ত হলেন অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল এম এ ডি ওসমানী এম সি। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জনাব ওসমানী আওয়ামী লীগ টিকিটে সিলেট থেকে নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্য। এ সবই হচ্ছে বাস্তব ইতিহাস।

আমার জবানবন্দি কিন্তু অসম্পূর্ণ। ১৯৭১ সালের ১৯ শে মার্চ থেকে ২৮ শে জুন পর্যন্ত মাত্র ১০০ দিনের সশস্ত্ৰ প্রতিরোধ সংগ্রামের জবানবন্দি। এরপরেই প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধ। আসলে কিন্তু রণক্ষেত্রের বিজয়ের ইতিহাস তো বলতেই পারলাম না। সে ইতিহাস হচ্ছে ১৯৭১ সালের জুলাই মাস থেকে শুরু করে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের একটার পর একটা বিজয়ের ইতিহাস। পুরো বক্তব্য লিপিবদ্ধ করার আর সময় পেলাম কই?

[‘আমিই খালেদ মোশাররফ’ বইটির শিরোনামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশার্রফ-এর জবানিতে এই প্রাসংগিক কথাবার্তা সম্পাদক]

Writer

এম আর আখতার মুকুল

Publisher

অনন্যা

Language

বাংলা

Country

Bangladesh

Format

হার্ডব্যাক

রিসেন্ট ভিউ বই
Your Dynamic Snippet will be displayed here... This message is displayed because you did not provided both a filter and a template to use.
WhatsApp Icon