রাজা শান্তনু ও গঙ্গার পুত্র দেবব্রত। শর্তভঙ্গের কারণে শান্তনুকে ত্যাগ করে পুত্রকে নিয়ে চলে যান গঙ্গা। প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান পুত্রকে হস্তিনাপুরের যোগ্য উত্তরসূরিরূপে তৈরি করে ফিরিয়ে দেয়ার এবং তিনি তাঁর কথা রাখেন।
দীর্ঘকালের নিঃসঙ্গতা ভেঙে শান্তনুর জীবনে আসেন সত্যবতী। মহারানি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু দেবব্রতর রাজ্যাভিষেকে স্বপ্নভঙ্গ হয় সত্যবতীর। দেবব্রত রাজা হলে ভবিষ্যতে তাঁর পুত্ররা হবে রাজার সেবক। তাই বিবাহের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে শান্তনুকে ফিরিয়ে দেন সত্যবতী। সত্যবতীর প্রত্যাখ্যানে মুষড়ে পড়েন শান্তনু। পিতার দুঃখ লাঘবে সত্যবতীর নিকট প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন দেবব্রত। রাজ্যের উপর স্ব-অধিকার ত্যাগ করেন এবং চিরকাল ব্রহ্মচর্য পালনের প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। তাঁর এই ভীষণ প্রতিজ্ঞার জন্য ভবিষ্যতে তিনি ভীষ্ম নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
সত্যবতীর গর্ভজাত সন্তান ও তার উত্তরাধিকারীরা বংশ পরম্পরায় হবে হস্তিনাপুরের রাজাÑ এই আকাক্সক্ষা আর লোভ ভবিষ্যতে হস্তিনাপুরকে উপহার দিয়েছে অনিশ্চয়তা, ক্রোধ, রেষারেষি আর দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ। আর তারই ফলশ্রুতিতে মহাভারতের মূল উপজীব্য কৌরব-পাণ্ডবদের মধ্যকার হিংসা-দ্বেষ। সে হিংসার পরাকাষ্ঠে বলি হয়েছেন দ্রুপদ কন্যা দ্রৌপদী অর্থাৎ ঈশ্বরের প্রসাদ কৃষ্ণা। যুগে যুগে নারী তাঁর সম্মানের মূল্যে পুরুষের জয়ের পথ রচনা করেছেন। বিনাশ হয়েছে অধর্মের; প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ধর্ম, ন্যায়।