অবস্থাসম্পন্ন ও ব্রিটিশ শাসকদরদী পরিবারের সন্তান হলেও রেবর্তী বর্মন সাম্যবাদী ও ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে যোগ দিয়েছিলেন ছাত্রাবস্থায়। যৌবনের উল্লেখযোগ্য সময় কেটেছে ব্রিটিশ সরকারের জেলের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। ১৯২৩-১৯২৪ সালে রেবতীমোহন বর্মণ বেঙ্গল-ভলান্টিয়ারের কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্রুপের নেতৃত্ব দেন এবং শ্রীসংঘে যুক্ত থেকে কাজ করেন কলকাতা, বাঁকুড়া এবং বীরভূমে। ১৯২৭-১৯২৮ সালে ছাত্র-যুব আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি কিশোর-কিশোরীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া স্বর্ণপদক বিক্রি করে সেই টাকায় নিজের সম্পাদনায় 'বেণু' নামে একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করেন।
স্কুলজীবনের শেষ পর্যায়ে অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এবং বিপ্লবী স্বদেশি আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৩০ সালের আগস্ট মাসে কলকাতায় পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্টের ওপর বিপ্লবীদের আক্রমণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রেবতী বর্মণকে পুলিশ গ্রেফতার করে। জেলে বসে তিনি মার্কসবাদ-লেনিনবাদী দর্শন ও আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হন। দীর্ঘ আট বছর কারা-শাস্তির পর মুক্তি পান।
১৯৩৯ সালে তিনি ন্যাশনাল বুক এজেন্সী প্রতিষ্ঠা করেন। জেলে থাকাকালীন সময়ে তিনি সমাজ-বিবর্তনমূলক কয়েকটি গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি রচনা করেন, যা পরে বই আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯২৯ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম গ্রন্থ 'তরুণ রুশ'। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পুলিশ তাঁর ওপর হুলিয়া জারি করলে নিজ গ্রাম শিমুলকান্দিতে চলে আসেন। দেশভাগের পরে ১৯৫১ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে তাঁকে বাধ্য হয়ে মাতৃভূমি ছেড়ে আগরতলা চলে যেতে হয় এবং ১৯৫২ সালে সেখানেই তাঁর দেহাবসান ঘটে।